একটি নকিয়া সেট নিখোঁজ এবং..অতঃপর

nokia

প্রথম প্রকাশঃ Death of Nokia 5130 – The Mystery of Missing Mobile

নকিয়া সেটটাকে খুব মিস করি। নকিয়ার ৫১৩০ সেটটা প্রিয় ছিল। ইন্টারনেট ব্যবহার করা ছাড়াও টুকিটাকি ফটোগ্রাফিও করতাম মোবাইলের ছোট ক্যামেরাটা দিয়ে। কিন্তু সেদিন ঘুম থেকে উঠে সেটটা যেন হাওয়ায় গায়েব হয়ে গেল।

ফ্রেন্ডের ফোনে ঘুম ভাঙলো। ভাইব্রেশন দেয়া ছিল। ফোন সাইলেন্ট করা। ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুতে বাথরুমে গেলাম। ফিরে দেখি সেট নেই। নেই তো নেই-ই। পুরো রুমের কোথাও নেই। তারপরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য শোকেসের উপর, ভেতরে, সব জায়গায় দেখলাম। কম্বল নামিয়ে ঝাড়লাম। কোথাও নেই। অন্য রুমে যাইনি, তাই অন্য রুমে সেট যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। তবুও খুঁজলাম। সামনে আম্মুকে পেয়ে জানালাম সেট না পাওয়ার কথা। আম্মু ভাবলেশহীন কণ্ঠে বলল, যাবে কই? ঘরেই আছে। সকাল সকাল তো আর চোর আসে নাই।

আম্মুর হালকা ঝাড়ি মার্কা কথা শুনে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। সেট খুঁজতে শুরু করলাম। টর্চ লাইট দিয়ে শোকেস, আলমারির নিচে খুঁজলাম। সকাল সকাল এ কি ঝামেলা।

ততক্ষণে আম্মুর মোবাইল দিয়ে অনেকবার ফোন দিয়েছি। ভাইব্রেশন শুনিনি কোথাও। কী যন্ত্রণা! আজ ভাইব্রেশন দিলাম, আর আজই এমনটা হলো।

এর ১০ মিনিট পর দেখলাম আর ফোনই ঢুকে না। খাইছে! ঘটনা কী! ঠিক ঠিক চুরি হলো নাকি? আম্মুকে জানালাম। এরপর আম্মু বারান্দা থেকে ডাকলো। ডাক শুনেই মনে হলো খারাপ কিছু। গিয়ে দেখি হুইল পাউডার মেশানো গরম পানিতে ভেজানো কাপড়ের মধ্য থেকে চুপচুপে অবস্থায় আমার মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।  😐  😐

পরে অবশ্য ঘটনা জেনেছি। আমি বাথরুমে যাওয়ার পর আম্মু এসে বিছানার চাদর নিয়ে গেছে। আমিও ঘুমের চোখে আর খেয়াল করিনি যে বিছানার চাদর নেই। যেভাবে ভাঁজ অবস্থায় চাদর নিয়েছে, তার মধ্যেই সেটটা ছিল। পরে দেখলাম ব্যাটারি লাগানো থাকায় ভেতরে স্পার্ক করছিল। তৎক্ষণাৎ ব্যাটারি খুলে ফেললাম।

মেকানিকের কাছে নিলাম। ওরা সারাদিন রেখে নানাভাবে চেষ্টা করে জানালো সেটের ভেতরের সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। সবগুলো সার্কিট এক হয়ে গেছে ব্যাটারি থাকায়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সেট কি আর ঠিক হবে না তাহলে?

মেকানিক বলল, আপনার সন্তুষ্টির জন্য আরেকবার দেখাতে পারেন। কিন্তু আমার মনে হয় না ঠিক হবে। হলেও ভেতরের সব চেঞ্জ করতে হবে। সেই খরচে আরেকটা সেটই কেনা সম্ভব।

কী আর করা। সেট আলমারিতে তালাবদ্ধ করে এখন একটা চাইনিজ সেট নিয়ে ঘুরছি। ফটোগ্রাফির সাধ তো গেলই; একই সঙ্গে ইন্টারনেটে মেইল চেক করাও শেষ। 😥 😥

3 responses

  1. ওহ! খুবই খারাপ একটা ঘটনা ঘটল আপনার সাথে, যদিয় এজাতীয় বিষয় সচরাচর হয়না। চাদরটা পানিতে ভেজানোর আগে যদি চোখে পড়তো তবে হয়তোবা সেটটা রক্ষা পেত, কিন্তু যেহেতু পানিতে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে, সুতরাং নষ্ট হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।

    চাইনিজ সেট কি হারানোর পরে কেনা? নাকি আগেই ছিল?

    আপনার ফটোগ্রাফীর শখ আছে তো কষ্ট-টষ্ট করে একটা ক্যামেরা কিনে নিলেই পারেন।

    • চাইনিজ সেট আগে থেকেই বাসায় একটা ছিল। আর ক্যামেরা কিনবো টাকা নাই তো। 😀

Leave a reply to Sajib Cancel reply